
নকীব মাহমুদ, ঢাকা:
বাংলাদেশে এখন ব্যবসা বাণিজ্যের চেয়ে রাজনীতি লাভজনক পেশা। দেশে ভোটারবিহীন সরকারের নেতাকর্মীরা এই লোভে মরিয়া হয়ে পড়েছে। দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের দলীয় পদ বাগিয়ে নেওয়া, কমিটি থাকা, জনপ্রতিনিধি হওয়াকে তারা লাভবান পদ বলে মনে করেন। ফলে যে কোন উপায়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করেও তারা এখন কাউন্সিলর থেকে শুরু করে মেয়র এবং সবশেষ এমপি হওয়ার জন্য নিজের সবটুকুই খরচ করেন। আর একবার এমপি হলেই মধুর হাড়ি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন জানে, দেশে এমপি হওয়া মানেই পুরো বাংলাদেশ দখলের লাইসেন্স তাদের হাতে। ফলে তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করে এমপি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করছেন। একটি পদের জন্য সেই রকম প্রতিযোগিতাও দেখা যাচ্ছে।
জানা গেছে, দেশের তিন আসনের উপ-নির্বাচনে ঢাকা-১৪ আসনে ২৬ জন, সিলেট-৩ আসনে ২১ জন ও কুমিল্লা-৫ আসনে ২৯ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও মনোনয়ন তুলেছেন।

দেশে লুটপাটের মহারাজত্ব চলছে। এই রাজত্বে যে যার মতো করে লুটপাট করছে। বি শেষ করে এই লুটপাটে অন্যতম শরীক দল আওয়ামীলীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তির কাছে চাঁদা আদায় করেন দলের পদ ব্যবহার করে। ফলে দিনদিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশে কোটিপতির খাতায় নাম লেখাচ্ছে। তারা প্রতিটি গ্রাম, পাড়া, মহল্লা ও ওয়ার্ডে যুবকদের নিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করছে। পরে দলীয় পদ ব্যবহার করে তারা কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। এভাবে এক সময়ে এইসব চাঁদাবাজরাই জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন কিনছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের ব্যানারে।
ভোটারবিহীন সরকারের দল আওয়ামীলীগও তাদের সেই মনোনয়ন দিয়ে চাঁদাবাজি, খুন, হত্যা ও রাম রাজত্ব কায়েমের লাইসেন্স দিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশে এমপিদের সম্পত্তের পরিমাণ হুহু করে বেড়েছে। যা খুঁজে পেতে দুদকও হিমসিম খাচ্ছে। তারা তাদের বিদেশী সম্পদের হিসেব চেয়ে বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করলেও কোন সাড়া মিলছেনা।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, দেশের ফেনীতে নিজাম হাজারী, নারায়নগঞ্জে শামীম ওসমান এবং ঢাকায় বিভিন্ন আসনে দলীয় ক্যাডাররা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ওইসব এলাকার মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ কোন প্রতিবাদ করলেই তাকে গুম, খুন ও হত্যা করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের হাতে অন্তত বিরোধী মতের কয়েক হাজার মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন।
জানা গেছে, দেশের ৩০০ আসনের প্রতিটি এমপি কম বেশি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। সরকারি জমি দখল, অন্যের বাড়ি , পুকুর ও ধানী জমি দখলে এগিয়ে আছে দলটির নেতাকর্মীরা। দেশের মানুষ এখন তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলটির প্রতিটি ওয়ার্ড ভিত্তিক নেতাই একজন বড় চাঁদাবাজ। তারা দলের নাম ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আদায় করছে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে। ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করে না। পরে এই টাকা দিয়ে তারা জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য ঢালছে। ঢাকার প্রতিটি অলিগলিতে এখন দলীয় ক্যাডারা চাঁদা তোলেন। এমনকি ময়লার চাঁদাও তারা তুলতে পিছপা হয় না।