৩ বছরে বিমান বাংলাদেশের হাজার কোটি টাকার অনিয়ম

উড়োজাহাজ লিজ নেয়া থেকে মেরামত, কর্মী নিয়োগ থেকে টিকিট বিক্রি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতি ধাপেই অনিয়মের ছাপ। তিন অর্থবছরেই প্রতিষ্ঠানটির ১ হাজার ৬৫ কোটি টাকার বেশি আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে অডিট অধিদপ্তর।

“আকাশে শান্তির নীড়” বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সীমিত সম্পদ আর জনবল সংকট নিয়েই পথ চলছে অর্ধশতক ধরে। সময়ের সঙ্গে বিমানের বহরে আকাশে পাখা মেলেছে অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনার। সারা বছরই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের চাহিদাও থাকে সর্বোচ্চ।

তবে রাষ্ট্রীয় এই শান্তির নীড়ই হয়ে উঠেছে অশান্তির ঠিকানা। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দানা বেধেছে অন্ধকারের গল্প। এর কিছু নথি এসেছে হাতে। শুরুটা করা যাক, অসংখ্য লিজ বাণিজ্যের মাত্র একটি ঘটনা দিয়েই।

২০১৪ সালে ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই ও রুট ঠিক না করেই ৪টি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান। এরপর শুধুই লোকসানের খতিয়ান। এর মধ্যে একটি উড়োজাহাজ প্রথম ৯ মাস না চললেও গুণতে হয় ভাড়ার টাকা। এরপর চুক্তি অনুযায়ী আগের অবস্থায় ফেরত দিতে গিয়েও যন্ত্রাংশ প্রাপ্তির জটিলতার নামে দুটো বিমান বসে থাকে প্রায় আড়াই বছর। অথচ সি চেক বা মেরামতের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের এ কাজ শেষ করার কথা ছিলো ১৩ দিনেই। এ ক্ষেত্রে বাড়তি প্রতিদিনের জন্য ১০ হাজার ডলার জরিমানার বিধান থাকলেও বিমান তুলতে পারেনি ১ টাকাও। উলটো ইজিপ্ট এয়ারকে চুক্তির বাইরে গিয়ে দেয়া হয় কারিগরি ক্ষতিপূরণ। এ সবকিছু মিলিয়ে বিমানের ক্ষতি হয় ৬৫৫ কোটি টাকার বেশি।

শুধু লিজ বাণিজ্যই নয়, বিমানের অনিয়মের ডালপালা ছড়িয়েছে মেরামত, কর্মী নিয়োগ থেকে টিকিট বিক্রি সবকিছুতেই। যার ফলাফল স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত বিমানের নিট লাভ হয়নি একবারও। পরিচালন মুনাফা হয়েছে মাত্র দুই বার।

১৯৭২ সাল থেকে আকাশে ডানা মেলা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে রয়েছে আধুনিক ২১টি উরোজাহাজ। তবে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মে প্রতিযোগী অন্যান্য এয়ারলাইন্সের তুলনায় দিন দিন পিছিয়ে পড়েছে সংস্থাটি। তাই ব্যবস্থাপনায় আমলা নির্ভর না হয়ে দক্ষ জনবল নিয়োগের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

Sharing is caring!