দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন এখন গুম আতঙ্কে ভুগছে। এই ঘটনা থেকেই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বোঝা যায়। ক্ষমতায় থাকা সরকারি দল আওয়ামী লীগের লোক ইচ্ছেমত দুর্নীতি করে যাবে কিন্তু যেন কেউ কিছুই বলতে পারবে না।
শরীফ উদ্দিন সর্বশেষ পটুয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তাকে অপসারণের কথা উল্লেখ করে গতকাল বুধবার দুদক চেয়ারম্যান মো. মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ একটি অফিস আদেশ দেন।
এর আগে প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি শরীফ উদ্দিন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন।
এ প্রসঙ্গে শরীফ উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি গণমাধ্যমকে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি অনেক বড় বড় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করেছি। বিশেষ করে চট্টগ্রামে জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১৫৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে ২০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছি। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম নিয়ে কাজ করেছি। সর্বশেষ পেট্রোবাংলার একটি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্ল্যানিং) আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছি।’
‘এ কারণে গত ৩০ জানুয়ারি (আইয়ুব খান) আমার বাসায় এসে আমাকে ১ সপ্তাহের মধ্যে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেয়। তার এ হুমকির বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার ১৬ দিনের মাথায় আমার চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হলো। আমাকে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি। এখন আমি অজ্ঞাত স্থানে আছি, যে কোনো সময় গুম হওয়ার আশঙ্কা করছি,’ বলেন শরীফ উদ্দিন।
এ দিকে তার সর্বশেষ কর্মস্থল পটুয়াখালী দুদক কার্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সহকর্মীরা। এতে সহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন, সহকারী পরিদর্শক কৃষ্ণ পদ বিশ্বাস, উপসহকারী পরিদর্শক সিকদার মুহম্মদ নুরুন্নবী, উচ্চমান সহকারী মো. নুর হোসেন গাজী প্রমুখ অংশ নেন।
তারা শরীফ উদ্দিনকে অসাংবিধানিক ভাবে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করে অবিলম্বে তার চাকুরিতে বহালের দাবি জানান।