
প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক বাংলাদেশী তরুণীকে ভারতের কেরালা রাজ্যে পাচার করা হয়েছে। বিষয়টি গত এক বছর থেকেই গোপন ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই তরুণীকে কয়েকজন যুবক মিলে যৌণ নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আলোচনায় আসে ঘটনাটি।
এই ঘটনার সঙ্গে রাজধানীর মগবাজার এলাকার হৃদয় নামে এক টিকটকার জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগ তা নজরে নেয়। এরপর তার পরিচয় সনাক্ত করে। এদিকে নতুন তথ্য হলো, এ ঘটনায় জড়িত বাংলাদেশি তরুণ রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
যৌন নির্যাতনের ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়ানোর পর জড়িতদের গ্রেফতার অভিযানের মধ্যে পালানোর চেষ্টাকালে টিকটক হৃদয়ের পায়ে গুলি করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। হৃদয় সেখানকার একটি স্থানীয় হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম, সাংবাদিক ও বেঙ্গালুরু পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি- পালানোর চেষ্টাকালে জড়িত দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের একজন টিকটক হৃদয়।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (এনসিবি শাখা) মো. মহিউল ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যা জেনেছি, তা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম সূত্রেই। অফিসিয়ালি ঘটনা সম্পর্কে, ভুক্তভোগী এবং আটকদের সম্পর্কে জানতে আমরা দিল্লি এনসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, মেইল করা হয়েছে। তবে তারা আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমাদের কোনো কিছু জানায়নি।
তিনি বলেন, যেহেতু হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে, তেজগাঁও ক্রাইম ডিভিশন বিষয়টি তদন্ত করছে। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বক্তব্য পাওয়ার পরই ভুক্তভোগী এবং আটকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এক্ষেত্রে বলতে পারেন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় মেয়েটির বাবা রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ছুটে আসেন এবং তার মেয়ের ভিডিও দেখে মেয়েকে সনাক্ত করেন। মেয়ের বাবা জানান, তার মেয়ের চাঁদপুরে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু তিনি জানতেন তার মেয়ে হৃদয় নামের এক ছেলের সঙ্গে স্বামীর কাছে গেছেন। ফলে এক বছর থেকে তার কোন খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের একজন তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩-৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে।
তরুণীকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতন ও ভিডিও ভাইরাল প্রসঙ্গে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশের এক প্রেস নোটে জানানো হয়েছে, ভিডিও ক্লিপ দেখে ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ পাঁচ জনকে দ্রুত শনাক্ত করে আটক করা হয়। এরপর ভিডিও ক্লিপ এবং আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে রামমূর্তি নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নিপীড়ন ও এ সংশ্লিষ্ট আইনের অন্যান্য ধারায় মামলা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সবাই বাংলাদেশি।
এ বিষয়ে দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চক্রটি ওই তরুণীকে নির্যাতনের সময় ধারণ করা ভিডিও ক্লিপ আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরপরই নর্থ ইস্ট পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্যে নিয়ে বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত বাংলাদেশি তরুণ রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় গুলিবিদ্ধ হয়েছে।