বাংলাদেশের মানুষ যখন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে হাহাকার করছে, টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে না পেরে চোখের পানি ফেলছে তখন নিজের খেয়াল খুশিমত ‘পাগলের প্রলাপ’ বকে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তার কথা শুনে মনে হয়, হয় তিনি উন্মাদ অথবা মেধাহীন।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের একজন শ্রমিক একদিন কাজ করে ২০ কেজি চাল কিনতে পারেন। তার বক্তব্য ধরে যদি আমরা হিসেব করি তাহলে দেখা যায়, ২০ কেজি চালের দাম ৬০ টাকা করে ১,২০০ টাকা। আর প্রতিদিন ১,২০০ টাকা করে আয় করলে একজন শ্রমিকের আয় ৩৬,০০০ টাকা। যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারে অসম্ভব বিষয়! তার মানে হয় তিনি অংকে দুর্বল নাহয় তার ভালো মানসিক রোগের ডাক্তার দেখানো দরকার।
ঐ অনুষ্ঠানে এই মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ আগের চেয়ে ভালো আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় গত ১৩ বছরে সাড়ে ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না। কোথায় অনুসন্ধান করে পেলেন দেশে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে, সে প্রশ্ন আমার। সন্ধ্যার পরে কিংবা ভরদুপুরে ঢাকা বা অন্য শহরের অলিতে-গলিতে, গ্রাম-গ্রামান্তরে ডাক শোনা যায় না ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দেন’। কেউ যদি কাউকে বাসি ভাত দেয়, তাহলে সেই বাসি ভাত মুখে ছুড়ে মারার সম্ভাবনা আছে। কারণ বাসি ভাতের সমস্যা আমাদের নেই।
এক মুষ্ঠি চাল ভিক্ষা দেবেন সেই দিনও চলে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা যখন ছিলেন, সারের দাবিতে মানুষ বিক্ষোভ করেছে, তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। কৃষকের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। শুধু তারা যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের উন্নয়ন হয়েছে, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, দ্রব্যমূল্য করোনার কারণে এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে কিছু কিছু পণ্যের দাম যে বৃদ্ধি পায়নি তা নয়। সরকার সেই পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে। একইসঙ্গে যারা অসাধু ব্যবসায়ী, যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাকের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয় তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারণ কোনো দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া সৎ ব্যবসায়ীর কাজ না। আমি আশা করবো, সংকট না থাকলেও যারা করোনা কিংবা যুদ্ধের অজুহাতে পণ্যের মূল্য যারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।