ভারতে ভ্যাকসিন ও অক্সিজেনের অভাব, উদাসিন মোদী

FILE PHOTO: FILE PHOTO: Small bottles labeled with a “Vaccine COVID-19” sticker and a medical syringe are seen in this illustration taken taken April 10, 2020. REUTERS/Dado Ruvic/Illustration/File Photo/File Photo

ভ্যাকসিনের অভাব। অক্সিজেনের আকাল। ভয়াবহ আকার নিচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। আর এর জন্য দায়ী একজনই—নরেন্দ্র মোদি। কারণ, তিনি ব্যস্ত বাংলা দখলের লক্ষ্যপূরণে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার অভাবই সাধারণ মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এমন তথ্য ও সংবাদ প্রকাশ করেছে কালকাতার দৈনিক আনন্দবাজার।

রবিবার করোনা ইস্যুতে এভাবেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলল বিরোধীরা। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন। রবিবার খড়দহের জনসভা থেকে নয়াদিল্লির লোক কল্যাণ মার্গের (প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন) বাসিন্দাকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘মোদি মিথ্যেবাদী। আজ কোভিডের এই বাড়বাড়ন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীই দায়ী। দেশের ভয়াবহ এই পরিস্থিতির জন্য তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।’ ভ্যাকসিন বণ্টনের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় চিঠিও দিয়েছেন তিনি। মমতার সুরেই এদিন মোদিকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আচরণকে ‘রোমান সম্রাট নিরো’র সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ভ্যাকসিন, অক্সিজেন, বেডের অভাবের আবহে মোদি-শাহের ভোটপ্রচার নিয়ে সরব ইয়েচুরি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ি, মনমোহন সিং সহ অনেক প্রধানমন্ত্রীকেই আমি দেখেছি। কিন্তু এইরকম অপদার্থ প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। কোনও দক্ষতা নেই। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। আর সেই পরিকল্পনার ভুলেই হু হু করে বাড়ছে করোনা। তাই এর দায় নিয়ে নরেন্দ্র মোদির ইস্তফা দেওয়া উচিত। ভ্যাকসিন রাজনীতি নিয়েও খোলাখুলিভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, আমাদের রাজ্যে ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে। কিন্তু তা এখনও দেয়নি কেন্দ্র। অথচ গুজরাতকে দেদার টিকা দেওয়া হচ্ছে। গুজরাতে বিজেপির পার্টি অফিস থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা। বলেছেন, ‘ভ্যাকসিনের অভাব নিয়ে মহারাষ্ট্র কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে। আজ আমিও কড়া চিঠি লিখেছি।’
দু’পাতার সেই চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘রাজ্য সরকার নিজের মতো করে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার মধ্যে নির্বাচন উপলক্ষে বাংলায় বাইরে থেকে রাজনৈতিক কাজে ব্যাপক সংখ্যক লোকজন আসা-যাওয়া করছেন।’
এদিকে, এতদিন পর প্রধানমন্ত্রীর কোভিড নিয়ে হুঁশ ফেরায় ট্যুইটারে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা চিদম্বরম। পাশাপাশি একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে (মমতা) নির্বাচনী সভায় নরেন্দ্র মোদি যেভাবে উপহাসের সুরে ‘দিদি’ বলে ডাকছেন, তার সমালোচনাতেও তিনি সরব হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের মাথায় বসে বেহালা বাদ্যরত প্রধানমন্ত্রীর কার্টুন ট্যুইট করে তাঁর প্রশ্ন, ‘কোনও প্রধানমন্ত্রী এভাবে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে পারেন? আমি তো ভাবতেই পারি না যে, জওহরলাল নেহরু বা মোরারজি দেশাই অথবা বাজপেয়ি এই ভাষায় কথা বলছেন।’
ট্যুইটারে আক্রমণ শানিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারসভাকে করোনার সুপার স্প্রেডারে পরিণত করার সুযোগ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দায়সারা বৈঠকের গিমিক করছেন। ভারত কোভিডের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পড়েছে, আর মোদি-অমিত শাহ ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারে। ভারতীয়দের জীবনের চেয়েও কি তাঁদের কাছে ভোট প্রচার দামি?

Sharing is caring!