বন্ধ হয়ে গেল ইরানের একমাত্র পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র

সাধারণ নির্বাচনে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দিনে ইরানে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির একমাত্র পামাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

শনিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য কেন্দ্রটিতে কাজ বন্ধ হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পরমাণু কেন্দ্রটি।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, শনিবার দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি ইরানের সরকার। তবে পরমাণু কেন্দ্র বন্ধের কারণ নিয়ে রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংস্থার কর্মকর্তা গোলাম আলী রাকশানিমেহের জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে শনিবার বুশেহর পরমাণু কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে এবং তা ‘আগামী তিন-চারদিন’ বন্ধ থাকবে।

তিনি এর বেশি আর কিছু জানাননি। তবে বুশেহর শহরের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত এই পরমাণু কেন্দ্রটি এবারই প্রথমবারের মতো আচমকা বন্ধ হয়ে গেল।

জানা গেছে, ইরানে পরমাণু কেন্দ্র হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। অবশ্য তেহরান বরাবরই বলে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। তারপরও পরমাণু কেন্দ্রে সর্বশেষ এই ঘটনা ইরানকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে দিতে পারে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী বুশেহরে ১৯৭০ সালে এই পরমাণু কেন্দ্রটি তৈরির কাজ শুরু করে ইরান। রাশিয়ার সাহায্যে কেন্দ্রটি তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রায় ৪০ বছর পর ২০১১ সালে পরমাণু কেন্দ্রটি কাজ করতে শুরু করে। সে সময় প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম রাশিয়া থেকে নিয়ে আসা হতো। এছাড়াও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে দেশটিকে রাশিয়া বরাবরই সাহায্য করে আসছে।

তবে ২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় পরাশক্তির সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। এর ফলে পামাণবিক বোমা প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম মজুতের ক্ষেত্রে রাশ টানতে বাধ্য হয় রুহানির প্রশাসন। এছাড়া ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করে, সে দিকেও নজর রাখে জাতিসংঘ।

চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ইরান হুমকি দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা না তুললে ইউরেনিয়ামের মজুত ফের বাড়ানো হবে। সে অনুযায়ী আগের চেয়ে ইউরেনিয়ামের মজুত কয়েক গুণ বাড়িয়েছে তেহরান। এছাড়া জাতিসংঘকেও পরমাণু কেন্দ্রের তথ্য দিচ্ছে না দেশটি।

Sharing is caring!