ইবিতে আওয়ামী দুই শিক্ষক সংগঠনের হাতাহাতি

মহান স্বাধীনতা দিবসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠনের দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের স্মৃতিসৌধে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশ ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক ইউনিটের দুই গ্রুপের শিক্ষকদের মধ্যে তিন দফায় এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে থাকলেও তাদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়। পরে শিক্ষক ইউনিটের সদস্যরা বেদি থেকে নেমে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। প্রতিবাদে বেলা ১১ টায় মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সমানে মানববন্ধন করেন তারা। তবে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন উভয় পক্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সকাল ১০ টার দিকে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পর একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংগঠন গুলো। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশ ফুল দেয়ার পর জিয়া পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়। তখন ফুল নিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক কাজী আখতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দারের নেতৃত্বে অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক আহসান উল আম্বিয়া, অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ, সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, নাহিদ হাসান, হাফিজুল ইসলামসহ প্রায় প্রায় ৩০ জন শিক্ষক বেদিতে ওঠেন।

এ সময় সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম তাদের বাঁধা দেয়। এরপরও তারা বেদিতে উঠে পরলে কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক মিজানুর রহমান,অধ্যাপক মামুনুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক বাকি বিল্লাহ বিকুল, সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষক তাদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলে তারা। এরপর প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক স্মৃতিসৌধের ওপর শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অন্যান্যদের সামনে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পরে।

প্রায় ২০ মিনিটের এ ঘটনায় তিন দফায় ধস্তাধস্তি করে শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষক ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাদের বাঁধা দেয়। পরে তাদের সামনে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকদের বেদী থেকে নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদি থেকে নেমে যায়।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন বলেন, তাদের জুনিয়র শিক্ষকরা আমাদের সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।

এ ঘটনার পর শিক্ষক ইউনিটের পক্ষ থেকে একটি মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার এ ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের অধিকার সবার আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে না দিয়ে বিএনপির লোকদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা।

Sharing is caring!