
পুঁড়ে ছাঁই হয়ে গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চল। অন্তত আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে আগুনের দাপট। ফলে জাবির ১০ একর বনাঞ্চল পুুরোটাই পুঁড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। তবে এই তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে, তা নির্ণয় করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আসে। তারা প্রায় ঘণ্টা খানেক চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষ্যম হয়। ততক্ষণে পুড়ে যায় এই বনাঞ্চলের পুরো এলাকা। ৭ এপ্রল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জাবি সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পেছন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। যা পরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত সবুজ অঞ্চলে। প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ বলেন, আগুনে সংরক্ষিত বনের বিপন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ ও পশুপাখির আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের উচিত আগুনের উৎসমূল খুঁজে বের করা। নইলে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটতেই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভেতরে প্রায় সময় এমন আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আগে শীতের শেষে এ ধরনের আগুনের সূত্রপাত হতো। এতে ব্যাপক পরিমাণে ছোট কীটপতঙ্গ মারা পড়ে গাছের ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, শীতের শেষ সময়ে ঝরা পাতার নিচে টিকটিকি, ব্যাঙ, গিরগিটিসহ ছোট ছোট অনেক প্রাণী আশ্রয় নেয়। আগুন লাগলে সব প্রাণী মারা যায়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ছোট এই প্রাণীগুলোর অনেক অবদান রয়েছে। তবে পরিবেশ ধ্বংসের মতো এই কাজগুলো কারা করে, আমরা আদৌ জানতে পারিনি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা বেলা ১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আগুনের ভয়াবহতা পর্যবেক্ষণ করে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিই। পরে দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও বলেন, আগুনের উৎস সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। এটা দুষ্কৃতকারীদের কাজ অথবা শর্টসার্কিটও হতে পারে।
সাভার ফায়ার বিগ্রেডের স্টেশন অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, আগুন লাগার পর আমাদের অবহিত করা হয়। আমাদের দুটি ইউনিট ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা সঠিক বলতে পারছি না।
এদিকে যত্রতত্র আগুনে হুমকির মধ্যে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য। তবে কীভাবে এসব আগুনের উৎপত্তি, তা নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।