মেন্থলযুক্ত সিগারেট ও সিগার নিষিদ্ধ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে

মেন্থলের ঘ্রাণযুক্ত সিগারেট এবং মেন্থলসহ যেকোনো ঘ্রাণযুক্ত সিগার (বিভিন্ন আকৃতির সিগারেট বিশেষ) নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। বৃহস্পতিবার তারা এক ঘোষণায় বলেছে, আগামী বছরের মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
এর উদ্দেশ্য হলো এই দুটি পণ্য ব্যবহারের ফলে যে পরিমাণ মানুষের রোগ হয় এবং মারা যান তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা। যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) মতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরোধ করা যায় এমন মৃত্যুর বড় কারণ ধূমপান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।

এফডিএর ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ড. জ্যানেট উডকক এক বিবৃতিতে বলেছেন, মেন্থলযুক্ত সিগারেট এবং সব ঘ্রাণযুক্ত সিগার নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে বহু প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিশেষ করে, এই প্রাণঘাতী পণ্যের কারণে যারা অন্যায্যভাবে আক্রান্ত হন তাদেরকে রক্ষা করা যাবে। এফডিএর এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তারুণ্যের সময়কার এমন নেশা কমিয়ে আনতে সহায়ক হবে। ধূমপানের নেশাকে কমিয়ে আনবে। বিভিন্ন ধর্মবর্ণের মানুষের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি সমস্যার সমাধান দেবে।

এফডিএ বলেছে এই নিষেধাজ্ঞা এক বছরের মধ্যে কার্যকর হবে বলে তারা আশা করছে। তাই বলে তাৎক্ষণিকভাবে তারা এই ঘ্রাণযুক্ত সিগারেট বা সিগার বন্ধ করবে না। কারণ, এই পরিবর্তন জনগণের একটি আইনি সাড়া দেয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে বিধিবিধান প্রয়োগ করা হবে শুধু সিগারেট বা সিগার উৎপাদনকারী, বিতরণকারী, খুচরা বিক্রেতা, পাইকারি বিক্রেতা এবং আমদানিকারকদের ওপর, যাতে এই পণ্যগুলো আর কখনোই বাজারে না যায়। যাদের কাছে এই পণ্য থাকবে অথবা মেন্থলযুক্ত পণ্য যারা ব্যবহার করবেন- তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে না এফডিএ।

সিডিসির মতে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ সিগারেট বিক্রি হয়েছে, তার তিন ভাগের মধ্যে এক ভাগেরও বেশি এই মেন্থলের ঘ্রাণযুক্ত সিগারেট বা সিগার। তাই বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এফডিএর সেন্টার ফর টোব্যাকো প্রোডাক্টসের পরিচালক মিশ জেলার বলেছেন, উন্নত স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য এসব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

মেন্থলযুক্ত তামাকজাত পণ্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য প্রধানত বাজারজাত করা হয়েছে। এর ফলে খেয়ালখুশি মতো তা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

সিডিসির এক তথ্যমতে, মেন্থলযুক্ত পণ্যের শতকরা ৮৫ ভাগেরও বেশি ব্যবহারকারী হলেন কৃষ্ণাঙ্গ, শতকরা প্রায় ৪৭ ভাগ হিস্প্যানিক, ৩৮ ভাগ এশিয়ান এবং প্রায় ২৯ ভাগ শ্বেতাঙ্গ। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এর প্রতি আগ্রহ বেশি। তাই কৃষ্ণাঙ্গদের টার্গেট করে এই পণ্যগুলো বাজারজাত করতে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। মেন্থল সমৃদ্ধ এসব পণ্য অধিক মাত্রায় নেশা সৃষ্টি করে এবং এটা ত্যাগ করা খুবই কঠিন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যদি এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মেন্থল নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে ৯ লাখ ২৩ হাজার মানুষ ধূমপান ছাড়বেন। এর মধ্যে রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আমেরিকান। তাই এনএএসিপির প্রেসিডেন্ট ডেরেক জনসন বলেছেন, তার সংগঠন কয়েক বছর ধরেই মেন্থলযুক্ত সিগারেট এবং ঘ্রাণযুক্ত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

Sharing is caring!