
দিলশাদ আফরিন। থাকেন নারায়নগঞ্জে। একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। তার কারখানার সকল পণ্য তিনি চাঁদনী চক ও নিউমার্কেট এলাকার বিভিন্ন দোকানগুলোতে সরবরাহ করেন। ভালই চলছিল তার ব্যবসা। কিন্তু করোনায় লকডাউনে সব থমকে গেছে। গত সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে তার কারখানা। ফলে শ্রমিকরাও বেকার সময় কাটাচ্ছেন। তবে মাস গেলে তাদের ঠিকই মাসিক বেতন পরিশোধ করতে হবে। এমতাবস্থায় উপায় না পেয়ে গতকাল তিনি নারায়নগঞ্জ থেকে ছুটে আসেন। যোগ দেন নিউমার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে।
সেখানেই বসে পড়েন এই নারী। তার হাতে ছিল-‘ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা চাই’ দাবিতে প্লাকার্ড। এসময় অন্যদের হাতের প্লাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল-‘করোনা থেকে বাঁচতে গিয়ে না খেয়ে মরতে চাই না’, ‘আগে খাবারের নিশ্চয় তা দিন পরে লকডাউন’।শুধু নারায়নগঞ্জের দিলশাদই নন, গতকাল তার মতো তৃতীয় দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে নিউমার্কেট ও এর আশপাশের এলাকার সকল ব্যবসায়ীরা ছুটে আসা দিলশাদ বলেন, আমার মতো হাজারী নারী উদ্যোক্তা আছেন, যারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। এই লকডাউন চলতে থাকলে তো আমরা পথে বসে যাবো। এই সময় তিনি অভিযোগ করেন, অনেকেই তো প্রণোদনা পেল, বিভিন্ন সুবিধা পেল আমরা তো কিছুই পেলাম না। আসেন। এছাড়াও গতকাল রাজধানীর মিরপুর ও ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে ব্যবসায়ীরা। এসময়তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন অন্তত চার ঘণ্টা মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানায়।
আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা। এতে অংশ নেয় কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় ব্যবসায়ীরা দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার দাবি জানান। ব্যবসায়ী আলী আহমেদ বলেন, আমরা নির্দিষ্ট একটা সময় মার্কেট খোলা রাখতে চাই। রমজানে দোকান খোলা না থাকলে কী হবে, জানিনা। গত বছরের ক্ষতিই পুষিয়ে উঠতে পারিনি।
চাঁদনী চক বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, গত বছরের ধাক্কা এখনো আমরা পুষিয়ে নিতে পারিনি। আবার লকডাউন দিলে পথে বসতে হবে। এখন পিকআওয়ার। সামনে ঈদ। এই মুহুর্তে আমরা অন্তত কয়েক ঘণ্টা হলেও মার্কেট খোলা চাই।