‘ডিগবাজিতে’ এরশাদকেও ছাড়ালো পুলিশ!

বিছানার চাদর ও বালিশের কভার কেনা নিয়ে সাবেক স্বৈরাচার হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদকেও হার মানিয়েছে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পুলিশ বাহিনী। নিজেরাই নিজেদের কথা ঠিক রাখতে পারছে না বাহিনীটি। এ যেন উপুর্যুপরি ডিগবাজি।

গত কয়েকদিন আগেই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়, বেনোজীর আহমেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল জার্মানি যাচ্ছেন বিছানার চাদর ও বালিশের কভার কিনতে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকানেও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এর কয়েক দিন পরই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চাদর-কভার নয় এর রঙ পরীক্ষা করতে যাচ্ছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা পুলিশের মহাপরিদর্শক। কিন্তু তাতেও সাধারণ মানুষের হাসি কিংবা ক্ষোভ আটকানো গেল না!

তাই বাধ্য হয়ে এই বাহিনী আরও একটা ডিগবাজি খেল আজ।সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক (এআইজি) কামরুজ্জামান আরও একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে গণমাধ্যমে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ পুলিশ বাহিনীর জন্য জার্মানি থেকে ১ লাখ চাদর কেনার লক্ষ্যে জার্মানি সফর করছেন মর্মে একটি অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারিত হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য এই যে, পুলিশ বাহিনী জার্মানি থেকে বালিশের কাভারসহ বিছানা চাদর ক্রয় করছে না। তা ছাড়া, জার্মানি বিছানা চাদর উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোনো দেশ নয়, তারা ভারী শিল্পের দেশ।

সংগত কারণে আইজিপির চাদর, বালিশের কাভার ক্রয়ের জন্য জার্মানি গমনের কোনো অবকাশ নেই। তা ছাড়া, গণক্রয় আইন অনুযায়ী সরকারি ক্রয় কোনো কর্মকর্তা ব্যক্তিগত সামগ্রীর মতো কোনো মার্কেট বা দেশ সফরে গিয়ে কোনো প্রকার সরকারি পণ্য ক্রয় কিংবা সংগ্রহ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া রয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ সবসময়ই স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে স্থানীয় প্রস্তুতকারীদের প্রস্তুতকৃত বিছানা চাদর, বালিশের কাভার ক্রয় করে থাকে। চলতি বৎসরেও অনুরূপভাবে বাংলাদেশ পুলিশ স্থানীয়ভাবে দরপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বিছানা চাদর, বালিশের কাভার সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এদিকে বেনজীরের চাদর কিনতে যাবার ঘটনা প্রকাশিত হবার পর আরও একটি সংবাদ বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। সেটি হলও, জার্মানিতে গিয়ে র‍্যাবকে ‘সাহস’ দিতে চাইছিল বাহিনীটির সাবেক প্রধান। বিনা বিচারে মানুষ হত্যার জন্য র‍্যাবের সাথে সাথে এই ব্যক্তিও রয়েছেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞায়। সেদিক থেকে তিনি যদি এখন জার্মানে যেতে পারেন তবে র‍্যাবের মধ্যে একটা সাহস আসবে যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইউরোপে সেটার প্রভাব নেই।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র নাগরিক টিভিকে নিশ্চিত করেছে, জার্মানির পক্ষ থেকে হ্যাঁ কিংবা না কোন সিগন্যালই পাচ্ছেন না বেনজীর আহমেদ। পাশাপাশি সদ্য বহিষ্কৃত তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুড়াদের কানাডায় ঢুকতে না পারার অভিজ্ঞতা থেকেই জার্মানির দিকে পা বাড়ানোর সাহস পাচ্ছে না ‘প্রচণ্ড’ দুর্নীতিগ্রস্থ এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বেনজীরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি রয়াবে থাকাকালীন প্রচুর বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এমনকি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে এমন কোন অপরাধ নেই যা এই পুলিশ প্রধান করেননি।

Sharing is caring!