পুলিশ প্রশাসনে পরীমণি আতঙ্ক

নকীব মাহমুদ, ঢাকা:
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমণি এখন আতঙ্ক। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের অনেকের কাছে। বিভিন্ন সময়ে যারা পরীমণির সঙ্গে ছবি তুলেছেন, তাকে পুলিশের অনুষ্ঠানে ডেকেছেন এবং তার সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন সেই কর্মকর্তারা বেশি ভয়ে আছেন। তবে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এডিসি গোলাম সাকলায়েন সিথিলের সঙ্গে পরীমণির প্রেমের সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকে এই আতঙ্ক আরও বহুগুনে বেড়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বিভিন্ন সময়ে পরীমণির সঙ্গে যারা ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন তারা এখন সেই ছবিগুলোও রিমুভ করছেন এবং অনেকে ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভেট করেও রাখছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ডিবির এডিসি সাকলায়েনের পরীমণির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর মাঝে একদিন তিনি তার ফ্লাটে ডেকে ১৮ ঘণ্টা সময় ধরে রাখেন। এই লম্বা সময়ে তাদের মাঝে কি হয়েছে তাে এখনো জানা যায়নি। তবে সাকলায়েন সিথিলের ফ্লাটে প্রবেশের ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। এছাড়াও বিষয়টি পরীমণির নিজস্ব গাড়ি চালক তা চাউর করে দিয়েছেন। এমন সংবাদ প্রকাশের পর ডিবির ওই কর্মকর্তাকে সকল কাজ থেকে নিবৃত্ত করার আদেশ দিয়েছে ডিএমপি।

ডিবির এডিসি সাকলায়েনের সঙ্গে পরীমণির এমন কাণ্ড প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে, যারা বিভিন্ন সময়ে পরীমণির সঙ্গে ছবি তুলেছেন, তার বাসায় গেছেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডিএমপিতে পরীমণিকে নিয়ে এসেছেন তারাও কি অপরাধী বলে গণ্য হবেন? তবে একটি সবার কাছে খোলাসা, ডিবির ডিএ তায়েবের সঙ্গে পরীমণির সিনেমার বিষয়টি। এখন তার সঙ্গে কিছু ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।

আতঙ্কের তালিকায় বেশি আছেন ডিবির কর্মকর্তারা। বিশেষ করে যারা বোড ক্লাবে পরীমণিকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়া মামলাটির তদন্তে আছেন। সেইসব কর্মকর্তারা আর কেউ মুখ খুলছেন না। তারা ভাবছেন এডিসি সাকলায়েনের অপরাধ তদন্তে তাদেরও আবার ডাকা হতে পারে কিনা।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, পরীমণির সঙ্গে সাকলায়েনের প্রেমের সম্পর্কটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে ডিবিসহ পুলিশের উপরের লেভেলের কর্মকর্তারা ভয়ে আছেন। কারণ তাদের অনেকেই পরীমণির বাসায় যেতেন। তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতেন। ওইসব কর্মকর্তারা কেন তাকে এত সমীহ করতেন তাও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের কাছে।

বিশেষ করে পুলিশের জঙ্গী নিয়ে কাজ করা ইউনিটের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে পরীমণির গভীর সম্পর্ক। তারা কি কারণে পুলিশের অর্থায়নে করা সিনেমায় পরীকে বাছাই করেছিলেন সেটাও ভাবা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সিনেমায় তাকে জড়াতে কোন কোন কর্মকর্তা কখন তার সঙ্গে কি করেছেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি পরীমণির সঙ্গে নিয়মিত কাদের যোগাযোগ তাও তদন্ত করছে সংশ্লিষটটরা।

এদিকে একটি সূত্র বলছে, পরীমণি মুলত পুলিশর আইজিপি বেনজির আহমেদ ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুনের দ্বন্দ্বের বলি। প্রায় মাস খানেক আগে ডিবির হারুন বলেছেন, পরীমণি তার বোনের মত। আর পরীমণি বলেছিলেন, পুলিশ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। তাহলে এখন প্রশ্ন ডিবির হারুন কেন পরীকে গ্রেফতারের দিন কোন সাড়া দিলেন না। তবে তিনিও কি কোন সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন। নাকি তার তিনি অসহায় ছিলেন?

এবিষয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, যারা পরীমণির প্রশ্রয়দাতাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। কিন্তু এই প্রশ্রয়দাতাদের তিনি আদৌ আইনের আওতায় আনতে পারবেন কিনা তাও নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

Sharing is caring!