জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তারেক শামসুর রেহমান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
শনিবার উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে নিজের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। এ সময় বাসায় কেউ ছিলেন না। পুলিশ দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে। তার মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে নেওয়া হয়।
রাজউকের উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. মোজাফফর আহমেদ জানান, শনিবার সকালে অধ্যাপক রেহমানের বাসায় আসে তার গৃহকর্মী। বাইরে থেকে কলিং বেল দিলেও তিনি দরজা খোলেননি। পরে সিকিউরিটি গার্ডকে বিষয়টি জানানো হয়। এরপর আশপাশের সবাই ফ্ল্যাটে গিয়ে তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু তার কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে বেলা ১১টার দিকে তুরাগ থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে।
মোজাফফর আহমেদ আরও জানান, তারেক শামসুর রেহমানের লাশটি বাথরুমের সামনে পড়ে ছিল। তিনি সেখানে বমি করেছিলেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের সভাপতি ফজলুল হালিম রানা বলেন, স্যার উত্তরা একাকী থাকতেন। তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপনা থেকে বছর দুয়েক আগে অবসরে যান। স্যারের মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে দাফন করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য তারেক শামসুর রেহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এর আগে তিনি সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ও বৈদেশিক নীতি নিয়ে গবেষণামূলক বেশ কটি গ্রন্থ রয়েছে তার। এ ছাড়া তুলনামূলক রাজনীতি নিয়েও তার বেশ কটি গ্রন্থ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী অধ্যাপক রেহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি ড. রেহমান নিয়মিত কলাম লিখতেন। প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকে তার কলাম নিয়মিত ছাপা হতো। টেলিভিশন টকশোতেও অনেকটা নিয়মিত কথা বলতেন। নির্মোহভাবে নানা ইস্যুর বিশ্লেষণ করতেন তিনি।
জানা গেছে, তারেক শামসুর রেহমানের জন্ম পিরোজপুর জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ও জার্মানি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।