
নকীব মাহমুদ, ঢাকা:
বাংলাদেশে টিকা নিয়ে হযবরল অবস্থা চলছে।এটা শুরু থেকেই। কিন্তু বিষয়টি এতদিন সবার চোখে তেমনভাবে পড়েনি। সর্বশেষ সম্প্রতি প্রবাসী ওমর ফারুক নামের এক যুবক তিনবার টিকা নেয়ার বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তোলপাড় উঠেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অবহেলা ও উদাসিনতাকে দায়ি করেছেন অনেকে। ফলে তারা এখন বিপাকে। সেই সঙ্গে বিপাকে পড়েছে সরকারও। বাধ্য হয়ে বুধবার ওই প্রবাসী যুবককে বাসা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে আসা হয়। এখন সেই ফারুককে চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে রেখেছে বলে জানা গেছে।
প্রবাসী ফারুকের পরিবার জানায়,বুধবার সাদা পোশাকে কে বা কারা তাকে তুলে নেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ফারুক। তবে বৃহস্পতিবার তার খোঁজ মিলেছে। তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
তবে তিনবার টিকা নেয়ার বিষয়টি নাকোচ করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসকদের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ফারুক আমাদের (বিএসএমএমইউতে) এখানেই রয়েছেন। আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে এসব কথা বলেন।
ওমর ফারুককে তিন ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রথমেই আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, একই সময়ে একই ব্যক্তিকে তিন ডোজ টিকা দেওয়া হয়নি। দ্ব্যর্থহীনভাবেই আমি একথাটি বলতে চাই। তারপরও যেহেতু এ বিষয়ে নিউজ হয়েছে, তাই ভেরিফাই করা দরকার। আদৌ হয়েছে কি-না। কিন্তু আমাদের যে সিস্টেম, এটা কোনোভাবেই হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গত মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ওমর ফারুক একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, বিএসএমএমইউ টিকাদান কেন্দ্রের তিনটি বুথ থেকে তাকে তিনবার টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপর ওই ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলেও গণমাধ্যমে খবর আসে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে একই দিনে ৩ ডোজ টিকা দেওয়ার যে খবর রটেছে তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুধু কি তাই, কুষ্টিয়াতেও এক ব্যক্তির দুবার টিকা নেয়ার খবর প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। বিজয় টিভির একটি ক্লিপ ভিডিওতে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এখন সেটি নিয়েও চলছে সমালোচনার ঝড়। তবে সেই ব্যক্তিকে এখনো আটক করেনি কেউ। যদিও সরকার এই টিকা নিয়ে শুরু থেকে অপরিকল্পনা ও অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। তার প্রমাণও মিলছে এখন।
স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, গণহারে টিকা দিতে হবে। এ জন্য কোন নিয়ম দরকার নেই। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই চলবে। তবে সেই পথে এখন হাঁটা শুরু করেছে বাংলাদেশের ভোটারবিহীন সরকার। সেই হাঁটার মাঝে আবার কি ঘটে যায় তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।